Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
রাধা রমন দত্ত এর সমাধি
স্থান

রাধা রমণ দত্তের বাড়ি বা তার সমাধিস্থল বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে অবস্থিত  

কিভাবে যাওয়া যায়

রাধা রমন দত্তের সমাধিটি জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের পাশে অবস্থিত। এখানে পৌঁছানোর জন্য, প্রথমে সুনামগঞ্জে বাসযোগে আসতে হবে। এরপর, সুনামগঞ্জ থেকে টেম্পু বা সিএনজি অথবা নৌকা যোগে জগন্নাথপুর উপজেলা সদরে যেতে হবে। উপজেলা সদর থেকে সমাধিটি খুব বেশি দূরে নয়, তাই রিকশা বা অন্য কোনো স্থানীয় পরিবহনে করে সেখানে যাওয়া যাবে। 

যোগাযোগ

0

বিস্তারিত

বাংলা লোকসংগীতের পুরোধা লোক কবি রাধারমণ দত্ত। তাঁর রচিত ধামাইল গান সিলেট ও ভারতে বাঙ্গালীদের কাছে পরম আদরের ধন। রাধারমন নিজের মেধা ও দর্শনকে কাজে লাগিয়ে মানুষের মনে চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। কৃষ্ণবিরহের আকুতি আর না পাওয়ার ব্যথা কিংবা সব পেয়েও না পাওয়ার কষ্টতাকে সাধকে পরিণত করেছে। তিনি দেহতত্তব, ভক্তিমূলক, অনুরাগ, প্রেম, ভজন, ধামাইলসহ নানা ধরণের কয়েক হাজার গান রচনা করেছেন।কবি রাধারমণের পারিবারিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় উপাসনার প্র ধান অবলম্বন সংগীতের সংগে তাঁর পরিচয় ছিল শৈশব থেকেই। খ্যাতিমান লোককবি জয়দেবের গীতগৌবিন্দ এর বাংলা অনুবাদ করেছিলেন তার পিতা রাধামাধব দত্ত। পিতার সংগীত ও সাহিত্যসাধনা তাকেও প্রভাবিত করেছিল। ১২৫০ বঙ্গাব্দেরাধারমণ পিতৃহারা হন এবং মা সু বর্ণা  দেবীর কাছে বড় হতে থাকেন। ১২৭৫ বঙ্গাব্দে মৌলভীবাজারের আদপাশা গ্রামে শ্রী চৈতন্যদেবের অন্যতম পার্ষদ সেন শিবানন্দ বংশীয় নন্দকুমার সেন অধিকারীর কন্যা গুণময়ী দেবীকে বিয়ে করেন। পিতার রচিত গ্রন্থগুলো সে সময় তাঁর জন্যপিতা আদর্শহয়ে অন্তরে স্থান করে নিল। কালক্রমে তিনি একজন স্বভাব কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। রচনা করেন হাজার হাজার বাউল গান । লিখেছেন কয়েকশ ধামাইল গান। ধামাইল গান সমবেত নারী কন্ঠেবিয়ের অনুষ্ঠানে গীত হয়। বিশেষত সিলেট, কাছাড়, ত্রিপুরা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে একসময় এর প্রচলন খুব বেশি ছিল। রাধারমণ দত্তএকাধারে গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী ছিলেন। জানা যায়, সাধক রাধারমণ দত্তও মরমি কবি হাসন রাজার মধ্যে যোগাযোগ ছিল। অন্তরের মিল ছিল খুব বেশী। তাঁদের মধ্যেবিভিন্নসময় পত্রালাপ হতো কবিতায়। একবার হাসন রাজা রাধারমণের কুশল জানতে গানের চরণ বাঁধেন: রাধারমণ তুমি কেমন, হাছন রাজা দেখতে চায়। উত্তরে রাধারমণ লিখেনঃ-কু শল তু মি আছো কেমন - জানতে চায় রাধারমণ। রাধারমণ একজন কৃষ্ণ প্রেমিক ছিলেন। কৃষ্ণবিরহে তিনি লিখেছেন অসংখ্য গান। তিনি বাল্যাবধি ঈশ্বরে বিশ্বাসী ও ধর্মানুরাগী ছিলেন। শাস্ত্রীয় পু স্তকাদির চর্চা ও সাধু সন্ন্যাসীর সংস্পর্শেএসে তিনি শাক্ত, শৈব, বৈষ্ণব ইত্যাদি নানা মত ও পথের সঙ্গেপরিচিত হন। কবির সংসার জীবন সম্পর্কেখুব বেশি তথ্যপাওয়া যায়নি। শুধু জানা যায়, রাধারমণ-গুণময় দেবীর ৪ ছেলে ছিল। তাঁদের নাম- রাজ বিহারী দত্ত, নদীয়া বিহারী দত্ত, রসিক বিহারী দত্তও বিপিন বিহারী দত্ত। কিন্তদুঃখের বিষয় একমাত্রপুত্রবিপিনবিহারী দত্তছাড়া বাকি ৩ পুত্রএবং স্ত্রী গুণময় দেবী অকালে মারা যান। স্ত্রী ও পু ত্রদের পরলোক গমনে কবি রাধারমণ দত্তসংসার জীবন সম্পর্কেউদাসীন হয়ে পড়েন।১২৯০ বঙ্গাব্দে ৫০ বছর বয়সে কবি চলে যান মৌলভীবাজার জেলাধীন ঢেউপাশা গ্রামে সাধক রঘম্ননাথ ভট্টাচার্যের কাছে। তিনি তাঁর কাছে শিষ্যত্বলাভ করেন। শুরুহয় কবির বৈরাগ্য জীবন। আরম্ভ করেন সাধনা। গৃহত্যাগ করে জগন্নাথপু র উপজেলার নলুযার হাওরের পাশে একটি আশ্রম তৈরি করেন। এখানে চলে তাঁর সাধন- নলুয়ার হাওরের আশ্রমে দিবা রাত্রসাধনা ও ইষ্টনামে মগ্নএবং অসংখ্যভক্ত পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতেন। ধ্যান মগ্নঅবস্থায় তিনি গান রচনা করে গেয়ে যেতেন। ভক্তরা শুনে শুনে তা স্মৃতিতে ধরে রাখত এবং পরে তা লিখে নিত।